মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন
ইয়াছিন আরাফাত (আশিক) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি, কালের খবর : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় সুস্থ্য হয়েও অসুস্থ্যতার ভান করে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ১২ সুস্থ্য ব্যক্তি বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ভাতা তুলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে কেউ ব্যবসায়ি কেউ গরুর খামারি কেউ দোকানদার আবার কারো কারো হাঁস মুরুগের খামার ও রয়েছে। তারা সম্পর্কে পরষ্পর আত্মীয় স্বজন, দুই বছর ধরে নিয়মিত তারা পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী ভাতা।
ঘটনাটি জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে। জানাগেছে ভাতা ভোগীরা জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারী এ ভাতা ভোগ করছেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা হলেন এনাম মিয়া, এংরাজ মিয়া, আনেছা বেগম, জাবেদ মিয়া, আবেদ মিয়া, বানেছা বেগম, খুশ বানু, রহিমা বেগম, হালিমা বেগম, তানজিলা আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস ও সানজিদা বেগম। নাসিরনগর উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে চাতলপাড় ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগী ১২ ব্যক্তির মাঝে কেউই প্রতিবন্ধী নন, তাদের অধীকাংশই মৃত প্রতিবন্ধীর স্থলে দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের নাম অন্তর ভূক্ত করে এ সরকারি ভাতা ভোগ করছেন। ইউনিয়ন সদস্য মোঃ আবুল কালামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন বানেছা বেগমের পরিবারের ১২ জন সুস্থ্য মানুষ প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে এটা এলাকার সবাই জানে, অথচ আমরা জনপ্রতিনিধি হয়েও প্রকৃত প্রতিবন্ধীর নাম সমাজ সেবা কার্যালয়ে অন্তর ভূক্ত করতে পারিনি। স্থানীয়দের দাবী বানেছা বেগম প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। বানেছা বেগমের সাথে যোগযোগ করতে তার মোবাইল ফোনে একাদিক বার ফোন করে এবং বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। জানাগেছে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় অসচ্ছল ও প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হয়, ভাতা পেতে আগে প্রতিবন্ধী সনদ গ্রহন করতে হয়, এক্ষেত্রে চিকিৎসকের প্রত্যয়ন পত্র প্রয়োজন হয়। সুস্থ্য মানুষ চিকিৎসকের প্রতিবন্ধী প্রত্যয়ন পেলেন কিভাবে জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অভিজিৎ রায় বলেন চিকিৎসকেরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখেই প্রত্যয়ন পত্র দেয়, আমার হাসপাতালের কোন চিকিৎসক অনিয়নের সঙ্গে জড়িত নয়। নাসিরনগর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা রাখেশ পাল বলেন একই পরিবারের ১২ জন সুস্থ্য ব্যক্তি প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে শোনার পর আমি ভাতা ভোগীদের বাড়িতে গিয়ে যাচাই বাছাই করে এর সত্যতা পেয়েছি, অনিয়মটি আমি এ কর্মস্থলে আসার এক বছর পূর্বেই হয়েছে। তিনি বলেন তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। জানতে চাইলে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, অনিয়মের বিষয়টি প্রমাণিত হলে দ্রত তদন্ত করে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।